বৈপরিত্য
মি
|
নিট পনেরো আগে এই নিয়ে তৃতীয় বার রোহনকে প্রপোজ করল সোহিনী। শিয়ালদার একটা অখ্যাত মিষ্টির দোকানে মুখোমুখি বসে তারা।
খানিকটা মনমরা হয়েই সিঙ্গাড়ায় কামড়টা বসাল সোহিনী।
খানিকটা মনমরা হয়েই সিঙ্গাড়ায় কামড়টা বসাল সোহিনী।
রোহন জিজ্ঞেস করল, "কেমন?"
খানিক্ষন চুপ করে থেকে সোহিনীর মুখ থেকে বেরল, "মন্দ না..."
যদিও তার মন বলছে, "অসাধারণ", তবু মুখ ফুটে বলতে পারল না।
খানিক্ষন চুপ করে থেকে সোহিনীর মুখ থেকে বেরল, "মন্দ না..."
যদিও তার মন বলছে, "অসাধারণ", তবু মুখ ফুটে বলতে পারল না।
একটা wrong number থেকে আলাপ দুজনের। true caller থেকে নাম আর ছবিটা জোগাড় করে ফেসবুকে friend request-টা রোহনই পাঠিয়েছিল। তখন অবশ্য কেউই ভাবেনি সম্পর্কটা কন্যাকুমারিকা থেকে উঠতে উঠতে শেষে কাশ্মীরের ডাল লেক অবধি পৌঁছে যাবে।
সোহিনী দেড় বছরের বড় ছিল রোহনের থেকে (ছিল মানে এখনো আছে)। তবে শুধু বয়স না, পার্থক্য ছিল আরও অনেক কিছুতেই।
সোহিনী দেড় বছরের বড় ছিল রোহনের থেকে (ছিল মানে এখনো আছে)। তবে শুধু বয়স না, পার্থক্য ছিল আরও অনেক কিছুতেই।
সোহিনীর বাবা ব্যাঙ্ক ম্যানেজার, আর মা রয়েছে ইনকাম ট্যাক্সে। 'দারিদ্র' শব্দটা সোহিনীর অভিধানে কোনকালেই ছিল না। 'অর্থাভাব' কী...খায় না মাথায় দেয়; তা সে জানে না। জানার দরকারও পড়েনি কোনকালে। তার কাছে evening snacks বলতে CCD বা Flurys।
___________________
___________________
রোহন সম্পূর্ণ অন্য পৃথিবীর। মায়ের আদর সে পেয়েছিল মাত্র ছ'মাস। খুব স্বাভাবিক ভাবেই মায়ের জীবন্ত মুখ তার মনে নেই। ছবিতে মাকে দেখাই তার বরাবরের অভ্যেস। বাবার একটা শাড়ির দোকান আছে পাড়াতে। বিশ্ব-ফুটবলে ভারতের অবস্থা যা, আজকালকার দিনে ব্র্যান্ডেড শাড়ির দোকানগুলোর তুলনায় রোহনের বাবার দোকানটাও প্রায় সেরকম।
প্রেমের অভিধানে "Opposite Attracts"
বলে একটা কথা চিরকালই ছিল। রোহন-সোহিনীর সম্পর্কটাও হয়তো সেই জন্যই তৈরী হয়েছিল।
চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিতে দিতে রোহন চোখ টিপে বলল, "আমার সঙ্গে থাকা মানে, পিৎজা-বার্গারের বদলে কচুরি-সিঙ্গারা, আমার সঙ্গে থাকা মানে, multiplex-এর বদলে single screen, আমার সঙ্গে থাকা মানে, shopper stop-এর বদলে গড়িয়াহাট বা হাতিবাগান। পারবে তো এরকম একটা লোকের সাথে এক ছাদের তলায় বাকি জীবনটা কাটাতে?
খানিকটা নিস্তব্ধতা কাটিয়ে সোহিনী রোহনের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরল।
___________________
___________________
মাস ছয়েক হল রোহন ব্যাঙ্কে চাকরি পেয়েছে। ঘটনাচক্রে সোহিনীর বাবা আর রোহন একই ব্রাঞ্চে রয়েছে। সোহিনী জানে এটা। কিন্তু রোহনের ব্যাপারে বাবাকে সাহস করে কি করে বলবে, তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারল না।
সেদিন ডিনার করতে করতে সুগত বাবু (সোহিনীর বাবা) মেয়েকে বললেন, "বুঝলি মামন (সোহিনীর ডাকনাম), মাস ছয়েক হল আমাদের ব্রাঞ্চে একটা নতুন ছেলে join করেছে, রোহন, দেখতে শুনতে ভালো, কথাবার্তাও, দেখে একটু সাধাসিধে মনে হয়, atleast আজকাল ছেলেগুলোর মতন নয়। ওর বাড়ির লোকের সাথে তোর ব্যাপারে কথা বলি? কি বলিস?"
সোহিনী speechless, চোখের কোনটা চিকচিক করে উঠল তার...
বছর পাঁচেক পর,
___________________
O.T.-তে ঢোকার আগে রোহনের হাতটা সোহিনী শক্ত করে ধরল, ঠিক সেই দিনের মতন। রোহন তার কানের সামনে মুখ নিয়ে গিয়ে বলল, "মেয়ে হলে 'রোহিনী', ছেলে হলে 'সোহন'..."
___________________
O.T.-তে ঢোকার আগে রোহনের হাতটা সোহিনী শক্ত করে ধরল, ঠিক সেই দিনের মতন। রোহন তার কানের সামনে মুখ নিয়ে গিয়ে বলল, "মেয়ে হলে 'রোহিনী', ছেলে হলে 'সোহন'..."
O.T.-র দরজা বন্ধ হয়ে গেল।
অসাধারণ লাগলো দাদা।
ReplyDeleteThank you for your valuable comment
Delete