বায়ু দূষণ কমিয়ে দেবে মানুষের গড় আয়ু
বায়ু দূষণে গোটা দেশে দিল্লি সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছে। এ খবর আমাদের সকলের জানা ,বায়ুদূষণ ভবিষ্যতে আমাদের গড় আয়ু কমিয়ে দেবে বলে এবার দাবি করলেন গবেষকরা ।আমেরিকার শিকাগো ইউনিভার্সিটির গবেষকদের তৈরি এয়ার কোয়ালিটি লাইভ ইন্ডেক্স( AQLI) এখানে
সূচক অনুযায়ী এই দাবি করা হয়েছে ।
গবেষকরা বলছেন মানুষের আয়ু কমিয়ে দিতে বায়ু দূষণের ভূমিকা ধূমপান, মদ্যপান, এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার চেয়ে বেশি ক্ষতিকর। অর্থাৎ ধূমপান মদ্যপান এসব শরীরের যত না ক্ষতি করছে তার চেয়ে বহুগুণ ক্ষতি করছে বায়ু দূষণ ।নিয়মিত দূষিত বাতাস শরীরে প্রবেশ করায় ভবিষ্যতে মানুষের গড় আয়ু কমে আসবে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী গোটা বিশ্বের জনসংখ্যার 36 % অংশ রয়েছে ভারত ও চীনে। দূষণের জন্য গোটা বিশ্বের মানুষের গড় আয়ু যখন প্রায় দু'বছর করে কমবে সেখানে ভারত ও চীনের ক্ষেত্রে 4 বছরের মতন কমে যাবে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের তৈরি গাইডলাইন মেনে যদি বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যায় তবে, এই দুটি দেশে মানুষের গড় আয়ু ঠিক থাকতে পারে। এখন গোটা বিশ্বের মানুষের গড় আয়ু 73 বছর ধরা হয় ।আগামী দিনে দূষণের কারণে ভারতে এই গড় আয়ু কমে 69 বছরে গিয়ে দাঁড়াবে।
বিশ্বজুড়ে সমীক্ষা চালানোর পর গবেষকরা জানিয়েছেন গোটা বিশ্বের জনসংখ্যার 73 শতাংশ মানুষ এমন অঞ্চলে বসবাস করেন যেখানে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাত্রা 'WHO' তৈরি গাইডলাইন ছাড়িয়ে গিয়েছে। আমেরিকার মতো দেশেও তিন ভাগের এক ভাগ অংশে বায়ু দূষণের মাত্রা গাইডলাইন অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করা হয় না।
যদি এই গাইডলাইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হতো তবে ওই অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের গড় আয়ু আরো এক বছর বেড়ে যেত। যে সব দূষণ মানুষের শরীরে সবচেয়ে ক্ষতি করে থাকে সেসব বিষয় নিয়ে গবেষণা করার পর দেখা দিয়েছে ধূমপান মানুষের গড় আয়ু প্রায় দেড় বছর কমিয়ে দেয়, সেই তুলনায় মদ বা অন্যান্য মাদক বা অ্যালকোহল জাতীয় পদার্থ গড় আয়ু 11 মাস কমিয়ে দেয়, অপরদিকে দিনের পর দিন অপরিশোধিত জল পান করলে 7 মাস এবং এইচআইভি এইডস আক্রান্ত হলে গড় আয়ু 4 মাস কমে যায় কিন্তু বায়ু দূষণে গড় আয়ু প্রায় 4 বছর পর্যন্ত কমে যেতে পারে। ধূমপান বন্ধ করে দিয়ে হৃদরোগ বা অন্যান্য রোগের হাত থেকে কোন ব্যক্তি নিজেকে সুরক্ষিত করতে পারে, কিন্তু বায়ু দূষণ রুখতে ব্যক্তিগতভাবে কোন কিছু করলে হবে না। এজন্য সকলকে কাজ করতে হবে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। এই ক্ষেত্রে দেশের নীতি নির্ধারকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
No comments