বিচিত্র প্রসাদ Facts about temple food
মন্দির, দেবতা, পূজা— এই শব্দগুলির অনুষঙ্গে এর পরেই যেটা আসে, সেটা ‘প্রসাদ’। হিন্দু উপাসনায় প্রসাদের গুরুত্ব অপরিসীম। দেবতা খান কি খান না, সেটা বড় কথা নয়। নিজের অন্তর থেকে খাদ্য অথবা অন্য নৈবেদ্য দেবতাকে নিবেদন করাটা একপ্রকার আত্মনিবেদনেরই প্রতীক। ভারতের মতো বিশাল দেশে মন্দির দেবতার বৈচিত্র্যও বিপুল। সেই সঙ্গে তাল রেখে বিচিত্র থেকে বিচিত্রতর প্রসাদের হদিশও পাওয়া যায়। কোন দেবতা কীসে তুষ্ট, তা যেমন এই প্রসাদ-তালিকা থেকে বেরিয়ে আসে, তেমনই ভক্তের মনোবাঞ্ছাটাই বা ঠিক কী প্রকারের, তা-ও স্পষ্ট হয় এই প্রসাদ-বৈচিত্র্য থেকে।
এখানে উল্লিখিত হল কিছু মন্দির ও সেখানকার আশ্চর্য সব প্রসাদের উদাহরণ।
• মহাদেব মন্দির, মাঝুভাঞ্চেরি, ত্রিচুর
এই মন্দিরের প্রসাদকে আশ্চর্যতম বললে কম বলা হয়। শিব-ভক্তরা এখানে দেবতাকে ভোগ দেন পাঠ্যপুস্তক, কলম, পেনসিল, খাতা এমনকী সিডি-ডিভিডি পর্যন্ত। এখানে আগত ভক্তদের বিশ্বাস, জ্ঞানের থেকে উৎকৃষ্ট আর কীই বা হতে পারে? তাই দেবতাকে তাঁরা জ্ঞানের প্রতীককেই প্রসাদ হিসেবে প্রদান করেন।
• আজাগর কোভিল, মাদুরাই
এলাকার মানুষ এই মন্দিরকে ‘আলাগর মন্দির’ হিসেবে ইজানেন। মাদুরাই শহর থেকে ২১ কিমি দূরে অবস্থিত
এই বিষ্ণু
মন্দিরে
একমাত্র
প্রসাদ
হল দোসা।
ভক্তরে
এখানে
দেবতাকে
শস্য ভোগ দেন। পরে সেটাই
সুস্বাদু দোসা হিসেবে
দেবতাকে
দেওয়া
হয় ও প্রসাদ
হিসেবে
বিতরিত
হয়।
• খবিস বাবা মন্দির, সীতাপুর, উত্তরপ্রদেশ
এই মন্দিরে কোনও দেবতা নেই, পুরোহিতও নেই। লখনউ থেকে ৮০ কিমি দূরে অবস্থিত এই মন্দিরে ভোগ দেওয়া হয় মদ। ১৫০ বছর আগেকার এক সাধুর স্মৃতিরক্ষার্থেই এই মন্দির তৈরি হয়েছিল। প্রসাদ হিসেবে ভক্তরা সেই মদেরই একাংশ পেয়ে থাকেন।
• মাতা বৈষ্ণোদেবী মন্দির, কাটরা
দেশের অন্যতম প্রধান এই মন্দিরে প্রসাদ একবারেই বাহুল্যবর্জিত। দেবীকে ভোগ দেওয়া হয় মুড়ি, চিনি, শুকনো ফল, নারকেল। আর তা দেওয়া হয় একেবারেই ইকো-ফ্রেন্ডলি চটের ব্যাগে। আরও মজার ব্যাপার, মাতারানির প্রসাদ অনলাইনেও লভ্য।
জগন্নাথ মন্দির, পুরী-
ভারতীয় মন্দিরগুলির মধ্যে সব থেকে বিস্তারিত প্রসাদ সম্ভবত পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে। জগন্নাথ মহাপ্রভুর মহাপ্রসাদে নিবেদিত পদের সংখ্যা থাকে ৫৬টি। প্রসাদ হিসেবে ভক্তরা এই প্রসাদ ক্রয় করতে পারেন।
No comments